পরীক্ষার ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত আইনস্টাইনের দ্বিতীয় স্বীকার্য অনুসারে আলোর দ্রুতি পর্যবেক্ষকের ওপর নির্ভরশীল নয়। কিন্তু গ্যালিলীয় রূপান্তর অনুসারে আলোর দ্রুতি পর্যবেক্ষকের গতির ওপর নির্ভরশীল। আইনস্টাইন গ্যালিলীয় রূপান্তর এবং দ্বিতীয় স্বীকার্যের মধ্যে অসঙ্গতি খুঁজে পান। কিন্তু পরীক্ষালব্ধ সত্য বলে তিনি দ্বিতীয় স্বীকার্যকে পরিত্যাগ করতে পারলেন না। সুতরাং চিরায়ত বলবিজ্ঞানে গ্যালিলীয় রূপান্তর আপাত সাফল্য অর্জন করলেও এবং সাধারণ অভিজ্ঞতার কাছে এর অবদান থাকলেও আইনস্টাইনকে স্বীকার্য দুটির সাথে মিল আছে এমন একটি রূপান্তর খুঁজতে হয় যা গ্যালিলীয় রূপান্তরের স্থান দখল করতে পারে এবং যথোপযুক্ত শর্তাবলির মাধ্যমে গ্যালিলীয় রূপান্তরে পৌঁছতে পারে।
১৯৩০ সালে এইচ. এ. লরেন্টজ (H. A. Lorentz)-এর তাড়িতচৌম্বক তত্ত্বের মধ্য দিয়ে এ সমীকরণগুলো জন্মলাভ করেছিল বলে এদেরকে লরেন্টজ রূপান্তর বলা হয়।
লরেন্টজ রূপান্তর সমীকরণগুলো নিচে দেওয়া হলো :
.. (8.14)
y' = y... (8.15)
z' = z.. (8.16)
… (8.17)
আমরা যদি S' কাঠামোর পরিমাপকে S কাঠামোর পরিমাপে রূপান্তরিত করতে চাই তাহলে v এর স্থলে -v বসাতে হবে এবং x', y', z', t' এবং x, y, z, t কে পরস্পর বিনিময় করতে হবে। এভাবে যে রূপান্তর পাওয়া যায় তা হলো বিপরীত লরেন্টজ রূপান্তর।
বিপরীত লরেন্টজ রূপান্তর সমীকরণগুলো হলো
. . (8.18)
y = y'... (8.19)
z = z'.. (8.20)
… (8.21)
লরেন্টজ রূপান্তরের বিশেষত্ব : লরেন্টজ রূপান্তরের দুটি সুস্পষ্ট দিক রয়েছে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমটি হলো, সময় এবং অবস্থানের পরিমাপ পর্যবেক্ষকের প্রসঙ্গ কাঠামোর উপর নির্ভরশীল এবং একটি কাঠামোতে পৃথক স্থানে দুটি ঘটনা যুগপৎ ঘটলেও অন্য কাঠামোতে যুগপৎ নাও ঘটতে পারে। দ্বিতীয়টি হলো, S এবং S' এর আপেক্ষিক বেগ v আলোর বেগের তুলনায় অত্যন্ত কম হলে লরেন্টজ রূপান্তর গ্যালিলীয় রূপান্তরে পরিবর্তিত হয়ে যায় ।
যখন v<< c ; তখন
এবং লরেন্টজ রূপান্তরের সমীকরণগুলো দাড়ায়-
y' = yy
z' = zz
t' = t
যা আসলে প্যালিলীয় রূপান্তর সমীকরণ।
যখন বস্তুর দ্রুতি আলোর দ্রুতির কাছাকাছি তখনই লরেন্টজ রূপান্তর প্রয়োগ করা হয়।
আরও দেখুন...